নীড় পরিচিতি
আমাদের সম্পর্কে

ঐতিহাসিক কাল থেকে বরাক উপত্যকায় বাংলাভাষী মানুষের বসবাস। শাসনতান্ত্রিক সুবিধা বিবেচনায় এই নদী বিধৌত অঞ্চলটিকে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির আপন স্বকীয়তা নিয়ে এই উপত্যকায় বসবাস করে আসছেন বাঙালিরা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্বেও উপত্যকায় বসবাসকারী অন্যান্য ভাষাগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে এক নিবিড় আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রেখে চলেছেন ইতিহাসের কাল থেকেই। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যখন এক ধরনের উগ্র জাতীয়তাবাদ সমগ্র আসাম রাজ্যকে আচ্ছন্ন করতে উদ্যত হয় তখন তার ঢেউ এসে এই উপত্যকাকেও গ্রাস করতে চায়। বহুভাষিক এই রাজ্যটির মূল চরিত্রকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং সব ভাষাগোষ্ঠীর মানুষের আপন আপন ভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষাকল্পে বরাক উপত্যকার প্রত্যেক ভাষাভাষী মানুষই এক ব্যাপক সচেতনতার প্রকাশ ঘটান এবং আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।

কিন্তু আগ্রাসনেচ্ছু উগ্র ও সংকীর্ণতাবাদীরা তাতে বিরত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে এই উপত্যকার মানুষদের ভাষিক পরিচয় মুছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৬১ সালের ১৯ মে মাতৃভাষার সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় তরতাজা এগারোটি তরুণ প্রাণ-কে পুলিশের গুলির মুখে আত্মাহুতি দিতে হয়। পরবর্তীকালে আরও একাধিক জন ভাষার অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় শহিদ হন। একটি স্বাধীন দেশের ইতিহাসে এই গুলিচালনা শুধু মর্মন্তদই নয়, সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করারই নামান্তর। এই কলঙ্কময় ইতিহাস রচনার পরও সংকীর্ণ উগ্র জাতীয়তাবাদীরা নিশ্চেষ্ট না হয়ে সুকৌশলে তাদের আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে সংখ্যালঘু ভাষাভাষী মানুষের ভাষা, স্বকীয় বৈশিষ্ট্যকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে বরাক উপত্যকার বৃহত্তম ভাষিকগোষ্ঠী বাঙালি সহ অন্যান্য ভাষিক গোষ্ঠীর মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ও আপন আপন মাতৃভাষা ও জাতীয় চরিত্র অক্ষুণ্ণ ও সুরক্ষিত রাখা এবং বিকাশ ঘটাবার নৈতিক দায়িত্ব অনুধাবন করেই এ অঞ্চলের কিছু সংখ্যক মাতৃভাষাপ্রেমি চিন্তকদের উদ্যোগে অবিভক্ত ‘সুরমা উপত্যকা সাহিত্য সম্মিলনী’-র ঐতিহ্যকে সামনে রেখে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে (১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে) ‘কাছাড় বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তী সময়ে উপত্যকায় তিনটি জেলা সৃষ্টির পর এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’
স্থাপনা

আমাদের সম্পর্কে

ঐতিহাসিক কাল থেকে বরাক উপত্যকায় বাংলাভাষী মানুষের বসবাস। শাসনতান্ত্রিক সুবিধা বিবেচনায় এই নদী বিধৌত অঞ্চলটিকে বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করা হলেও ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির আপন স্বকীয়তা নিয়ে এই উপত্যকায় বসবাস করে আসছেন বাঙালিরা এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্বেও উপত্যকায় বসবাসকারী অন্যান্য ভাষাগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে এক নিবিড় আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রেখে চলেছেন ইতিহাসের কাল থেকেই। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যখন এক ধরনের উগ্র জাতীয়তাবাদ সমগ্র আসাম রাজ্যকে আচ্ছন্ন করতে উদ্যত হয় তখন তার ঢেউ এসে এই উপত্যকাকেও গ্রাস করতে চায়। বহুভাষিক এই রাজ্যটির মূল চরিত্রকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং সব ভাষাগোষ্ঠীর মানুষের আপন আপন ভাষা সংরক্ষণ ও বিকাশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষাকল্পে বরাক উপত্যকার প্রত্যেক ভাষাভাষী মানুষই এক ব্যাপক সচেতনতার প্রকাশ ঘটান এবং আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠেন।

কিন্তু আগ্রাসনেচ্ছু উগ্র ও সংকীর্ণতাবাদীরা তাতে বিরত না হয়ে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে এই উপত্যকার মানুষদের ভাষিক পরিচয় মুছে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়। এরই ফলশ্রুতিতে ১৯৬১ সালের ১৯ মে মাতৃভাষার সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় তরতাজা এগারোটি তরুণ প্রাণ-কে পুলিশের গুলির মুখে আত্মাহুতি দিতে হয়। পরবর্তীকালে আরও একাধিক জন ভাষার অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় শহিদ হন। একটি স্বাধীন দেশের ইতিহাসে এই গুলিচালনা শুধু মর্মন্তদই নয়, সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করারই নামান্তর। এই কলঙ্কময় ইতিহাস রচনার পরও সংকীর্ণ উগ্র জাতীয়তাবাদীরা নিশ্চেষ্ট না হয়ে সুকৌশলে তাদের আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে সংখ্যালঘু ভাষাভাষী মানুষের ভাষা, স্বকীয় বৈশিষ্ট্যকে মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এমন এক পরিস্থিতিতে বরাক উপত্যকার বৃহত্তম ভাষিকগোষ্ঠী বাঙালি সহ অন্যান্য ভাষিক গোষ্ঠীর মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ও আপন আপন মাতৃভাষা ও জাতীয় চরিত্র অক্ষুণ্ণ ও সুরক্ষিত রাখা এবং বিকাশ ঘটাবার নৈতিক দায়িত্ব অনুধাবন করেই এ অঞ্চলের কিছু সংখ্যক মাতৃভাষাপ্রেমি চিন্তকদের উদ্যোগে অবিভক্ত ‘সুরমা উপত্যকা সাহিত্য সম্মিলনী’-র ঐতিহ্যকে সামনে রেখে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে (১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে) ‘কাছাড় বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তী সময়ে উপত্যকায় তিনটি জেলা সৃষ্টির পর এই প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন’।
~: স্থাপিত :~
১৩৮৩ বঙ্গাব্দ (১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ)
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য
  • ‘সম্মেলন’ একটি সাহিত্য ও সংস্কৃতিমূলক অপেশাদার অরাজনৈতিক সংস্থা।
  • ঘোষিত কর্মক্ষেত্রে বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা, প্রসার ও উন্নয়ন সাধন, বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে আলোচনা, চিন্তা ও গবেষণা, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করা এবং এর পরিপন্থী কোনও ধরনের অপপ্রয়াস প্রতিহত করা, জাতিগত আত্মপরিচয় রক্ষা ও প্রতিপালন, নাগরিকত্বের অধিকার রক্ষায় আবশ্যক পদক্ষেপ গ্রহণ।
  • ‘সম্মেলন’-এর আদর্শ ও লক্ষ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল অন্যান্য সংগঠনগুলির সঙ্গে ভাতৃত্বমূলক সুসম্পর্ক স্থাপন ও বৃদ্ধি করা এবং অন্যান্য ভাষা ও সাহিত্যগোষ্ঠীর সঙ্গেও অনুরূপ সু-সম্পর্ক স্থাপন ও সম্প্রসারণ করা; প্রত্যেক গোষ্ঠীর মাতৃভাষার নিজস্ব প্রতিভা বিকাশে সহায়তা ও সহযোগিতা করা।
  • গ্রন্থাগার ও পাঠাগার ইত্যাদি স্থাপন, আলোচনাচক্র, সাহিত্য বাসর, প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদি, সম্মেলন ইত্যাদি সংগঠিত করা।
  • বরাক উপত্যকার লেখক, লেখিকা, কবি ও সাহিত্যিক, সংস্কৃতিপ্রেমী ব্যক্তিদের পুস্তকাদি মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিপণনের ব্যবস্থা করা এবং এ ব্যাপারে সাহায্য ও সহযোগিতা করা।
  • বরাক উপত্যকার গ্রাম, গঞ্জ, বাগান শহর ও পাহাড়ি এলাকাগুলো থেকে বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রাচীন ও আধুনিক নিদর্শন সমূহ উদ্ধার ও সংরক্ষণ করা।
  • উপযুক্ত ক্ষেত্রে সাহিত্যিক, শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীকে আর্থিক সহায়তা করা।
  • ‘সম্মেলন’-এর স্বার্থে সম্পদ আহরণ করা।
  • বরাক উপত্যকার যে কোনও স্থানে পাঠাগার ইত্যাদি স্থাপন, পুস্তক ও পত্র-পত্রিকা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা।
  • নিরক্ষরতা দূরীকরণ, ভাষা শিক্ষা সম্প্রসারণ, বিবিধ সমাজসেবামূলক কার্যক্রম প্রণয়ন ও রূপায়ণে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ এবং সেই সঙ্গে বরাক উপত্যকায় আসাম সরকারি ভাষা আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্পর্কে প্রহরীর ভূমিকা পালন করা।
  • বরাক উপত্যকার আর্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক সরকারি পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় সংবিধান প্রদত্ত অধিকার সংরক্ষণের দাবিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও প্রয়োজনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জনমত বৌদ্ধিক আন্দোলন সংগঠিত করা।
  • বরাক উপত্যকার কৃতি সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণকে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজসেবামূলক ক্ষেত্রে তাদের বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মাননা / পুরস্কার, পদক, মানপত্র ইত্যাদি প্রদান করা।
  • মাতৃভাষা বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সক্রিয় এবং সদর্থক ভূমিকা পালন এবং শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ এবং সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করা।
সম্মেলন সংগীত
সম্মেলন সংগীত
গীতিকার  :  জন্মজিৎ রায়
সুরকার  :  রণধীর রায় 

আমরা তো একসাথে বাংলাভাষায় গান গাই ,

বাংলায় কথা বলি, জনমে-মরণে আছে বাংলা ভাষা-ই ,

জননীর অপমানে একসাথে দলবেঁধে (সকলে) গর্জাই।

বুকের রুধিরে লিখে গণদাবি-মিছিলে যে হাঁটবো,

আমরা বাঁচার তরে আন্দোলনে পথে নামবো।


আমরা বেসেছি ভালো তিনটি জেলার নীলাকাশ ,

আমরা ঘর করি শিল্প কৃষ্টি নিয়ে বারোমাস ,

বাংলা ভাষার দেশে আমাদের চির বসবাস ।

সেনানীর বেশ ধরে বাংলা ভাষার মান রাখবো ,

আমরা ভাষার তরে গ্রামে ও শহরে পথে নামবো ।


আমাদের শক্তি যে ঐক্যের শক্তি   আমাদের শক্তি যে সংঘের ,

আমাদের শক্তি যে প্রীতি আর সখ্য    মানবতা ভাব তরঙ্গের ।


শহিদেরা আমাদের কপালে দিয়েছে জয়টিকা ,

রাজরোষ জয় করে আমরা জ্বেলেছি দীপশিখা ,

ফুটিয়েছি মনে মনে ভাষার আশার কমলিকা ।

আমরা প্রহরী হয়ে র্নিঘুম দিনরাত জাগবো ,

আমরা ভাষার তরে আন্দোলনে পথে নামবো ।




গঠনতন্ত্র

একটি সংস্থা বা সংগঠন সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য গঠনতন্ত্র বা সংবিধান অপরিহার্য। বরাক উপত্যকার ভাষিক-সাংস্কৃতিক অধিকার আদায়, তার সুরক্ষা এবং আগ্রাসন প্রতিহত করার লক্ষে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দে (১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ) গঠিত বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের সূচনা পর্বেই তার সংবিধান বা গঠনতন্ত্র তৈরি হয়েছিল। তবে সময়ের প্রয়োজনে সময়ে সময়ে এই সংবিধান বা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন/সংযোজন হয়েছে। সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনের প্রতিনিথি সভায় সংগঠনের সমসাময়িক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন ধারা সংবিধানে সংযোজনার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে এবং সে অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সংবিধানের নতুন সংস্করণ প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমান গঠনতন্ত্র সম্মেলনের ২৯তম অধিবেশনের পর প্রকাশ করা হয়েছে।

১। সংস্থার নাম:

বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন।

এই গঠনতন্ত্রে ‘সম্মেলন' পদটি ‘বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন' বুঝাইতে ব্যবহৃত হইয়াছে।

২। কেন্দ্রীয় সমিতির ঠিকানা:

কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহক সমিতি,
বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন,
বঙ্গভবন,
অরুণকুমার চন্দ রোড, শিলচর-৭৮৮০০১।

৩। কর্মক্ষেত্র:

বরাক উপত্যকার তিন জেলায় সীমাবদ্ধ থাকিবে। কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বহির্বরাকবাসী অধ্যুষিত স্থানে সম্প্রসারিত হইতে পারে।

৪। প্রতীক:

পুস্তকের উপর একতারা।

৫। পতাকা:

হলুদ রঙের কাপড়, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ৩:২ যার মধ্যভাগে থাকিবে পুস্তকের উপর একতারার ছবি।

পাঠ করার জন্য উপরের বোতামে /
পিডিএফ কপি ডাউনলোড করার জন্য নীচের বোতামে
ক্লিক করুন।
download